সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু: দেশের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও শূন্যতা সৃষ্টি খালেদা জিয়া কোনো নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করেননি বিএনপি থেকে রুমিন ফারহানা ও আরও ৮ নেতার বহিষ্কার খালেদা জিয়া: একটি বর্ণাঢ্য ও প্রয়াত নেত্রীর জীবনকাহিনী সজীব ওয়াজেদ জয় খালেদা জিয়ার মৃত্যুকে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কার ব্যাখ্যা খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধায় ৩৩ দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারের বাসস্থান ত্যাগ যতদূর চোখ যায়, মানুষ আর মানুষ খালেদা জিয়ার জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত তারেক রহমানের সঙ্গে নেপাল-ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ই-সিগারেট ও ভেপ নিষিদ্ধের জন্য অধ্যাদেশ জারি
খালেদা জিয়া: একটি বর্ণাঢ্য ও প্রয়াত নেত্রীর জীবনকাহিনী

খালেদা জিয়া: একটি বর্ণাঢ্য ও প্রয়াত নেত্রীর জীবনকাহিনী

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একজন অবিসংবাদিত নেত্রী হিসেবে বিবেচিত খালেদা জিয়া ছিলেন ‘আপসহীন নেত্রী’। তার দীর্ঘ জীবনের অর্জন, সংগ্রাম ও শোকের গল্প দেশের বহু হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতির একজন ক্ষণজন্মা নেতা, যিনি জীবনভর সংগ্রাম, সাফল্য ও বেদনার প্রতিচ্ছবি আঁকেছিলেন।

খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে। তার বাবার নাম ইস্কান্দার মজুমদার, মা তৈয়বা বেগম। পরিবারের তিন কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তার শৈশব কেটেছে পরিশ্রমে, পরিচ্ছন্নতা ও ফুলের প্রতি গভীর ভালোবাসায়। পড়াশুনা আগেই শুরু করেন সেন্ট জোসেফ কনভেন্টে, পরে দিনাজপুর সরকারি স্কুল ও সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ছোটবেলায় তাকে ‘পুতুল’ ডাক নাম দেওয়া হয়েছিল কেননা তার অবয়ব হয়েছিল খুব সুন্দর।

বিবাহ life: ১৯৬০ সালে ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দিনাজপুরের বালুবাড়িতে বিয়ে হয় তার। এই দম্পতির দুই ছেলে— তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো। জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে দেশের রাষ্ট্রপতি হন এবং ১৯৮১ সালের ৩০ মার্চ তিনি শহীদ হন। তার মৃত্যুর পর খালেদা জিয়া রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে, তিনি বেশ কিছু সময় আত্মগোপনে ছিলেন, পরে ১৬ মে ঢাকায় এসে নৌপথে ঢাকায় প্রবেশ করেন। পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালের ২ জুলাই সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে সেনানিবাসে বন্দি করে। স্বাধীনতা লাভের পর তিনি মুক্তি পান এবং সংসার ও রাজনৈতিক জীবনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

রাজনৈতিক জীবনের শুরু: তার রাজনৈতিক জীবন ১৯৮২ সালে বিএনপিতে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয়, তখন তার বয়স ছিল ৩৬। তিনি প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারপারসন ও পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তার পরিচিতি আরও বৃদ্ধি পায়। ১৯৯১ সালে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আবার প্রধানমন্ত্রী হন। তার নেতৃত্বে বিএনপি বিভিন্ন নির্বাচনে জয়ী হয়, যা তার রাজনৈতিক জীবনের বড় সাফল্য।

তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তিনি দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে তার জীবনেও রয়েছে বিতর্ক, বিশেষ করে দুর্নীতির অভিযোগে। তবে তার দৃঢ়তা ও সংগ্রামী চেতনা তাকে দেশের মানুষের হৃদয়ে অম্লান করে রেখেছে। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগে ভুগে শেষ পর্যন্ত শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি।

তার জীবনের শেষ সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন, তিনি বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ২৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আর আরোগ্য লাভ সম্ভব হয়নি। অবশেষে, তিনি তাঁর প্রিয় মাতৃভূমির জন্য বিদায় নিলেন। তার জীবন ও কর্ম দেশবাসীর জন্য সত্যিই এক অনুপ্রেরণার ইতিহাস।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd